আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি ব্যয় ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে ভলান্টারি কনজুমারস ট্রেনিং এন্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটি (ভোক্তা)।

মঙ্গলবার (৬ জুন) ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে বাজেটের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে ভোক্তা। পাশাপাশি এগুলো সংশোধনে ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে নয় দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেছে সংগঠনটি।

মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে জনদূর্ভোগ সৃষ্টিকারী বাজার সিন্ডিকেট মোকাবেলায় সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ এবং করযোগ্য আয় না থাকার পরও রিটার্নের প্রমাণপত্র পেতে করদাতাকে ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বৈষম্যমূলক বিধান প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে এই সুপারিশে।

আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভোক্তা’র নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভোক্তার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর, ভাইস চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন নওরোজ, পরিচালক (অর্থ) লুৎফর রহমান লিটন এবং ড. লতিফুল বারী, মহসীনুল করিম লেবু, সাইদুল আবেদীন ডলার, মিজানুর রহমান তালুকদার, নুরুন নবী, গোলাম কবীর ও ফজলুল হক।

খলিলুর রহমান সজল বলেন, গত ১ জুন জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০২৩- ২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। একইসঙ্গে আয় দেখানো হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে সমস্যা থাকলেও সমাধানের দিক নির্দেশনার ঘাটতি রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের ভোক্তা সাধারণের অধিকার সুরক্ষায় ‘ভোক্তা’ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে একটি ভোক্তাবান্ধব বাজেট প্রণয়নের দাবি জানিয়েছিলো। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের আয় কমা ইত্যাদি বাস্তবতাকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

বাজেটের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরে তিনি বলেন, উচ্চ-মূল্যস্ফীতির সময়ে ব্যক্তি-শ্রেণির করমুক্ত আয়-সীমা বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা ইতিবাচক, তবে ৪ লাখ টাকা করা যুক্তিসঙ্গত। সার্বজনীন পেনশন চালুর ঘোষণাটি প্রশংসনীয় হলেও পেনশন প্রাপ্তির বিষয়টি স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক ও আতঙ্কমুক্ত। এছাড়া মানুষের গড় আয়ু বিবেচনায় ৬০ বছরের নিচের সকলকে এ স্কীমের আওতায় আনতে হবে।

বাজেটে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় নেওয়া এবং একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য পরিবেশ সারচার্জ আরোপের উদ্যোগেরও প্রশংসা করা হয়। পাশাপাশি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকা বা না থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করা, সামাজিক সুরক্ষা খাতে গরীব-উপকারভোগীদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করারও দাবি জানানো হয় এই সংবাদ সম্মেলনে।

প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোসহ ডলারের দাম কমানোর সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ ও সংকট উত্তরণের স্পষ্ট কোন নির্দেশনা নেই। অপরদিকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাজেটের ঘাটতি পূরণের উদ্যোগেরও সমালোচনা করে ভোক্তা।